বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২২ অপরাহ্ন

‘কেউ যদি এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেন শাস্তি মাথা পেতে নেবো’

‘কেউ যদি এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেন শাস্তি মাথা পেতে নেবো’

স্বদেশ ডেস্ক

বন্যার্তদের সহযোগিতার উদ্দেশে গঠিত ত্রাণ তহবিলের বেশিরভাগ টাকা পরিকল্পিতভাবেই ব্যাংকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল সোমবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

ভিডিওতে ত্রাণের টাকা ব্যাংকে কেন রাখা হয়েছে- তার বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।

হাসনাত বলেন, ‘তহবিল সংগ্রহের শুরুতেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, অর্থ সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে সব খরচ না করে বেশিরভাগই জমা রাখা হবে, কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে কারণ কী? কারণ আগের অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা জেনেছি যে, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরবর্তী ধাপে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর অর্থ সহায়তা বেশি প্রয়োজন হয়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এখন ওই অর্থ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ব্যয় করা হবে। আরও আগে থেকেই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর নির্মাণসহ অন্য কাজগুলো করে দেওয়ার কথা ভাবছিলাম, কিন্তু আয়-ব্যয়ের অডিট কমপ্লিট না হওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছিলো না। নিরীক্ষা শেষ করে শিগগিরই তহবিলের সব অর্থ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ব্যয় করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সরকার যে তহবিল গঠন করেছে, সেখানেই টাকাগুলো দেওয়া হবে। এর ফলে সুষ্ঠু ও কার্যকরভাবেই আমাদের তহবিলের অর্থ মানুষের কাজে আসবে বলে আশা রাখি। ত্রাণ সহায়তার জন্য যত অর্থ আমরা পেয়েছি, সেগুলোর প্রতিটি পয়সার হিসাব আমাদের কাছে আছে। কাজেই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রাথমিক ত্রাণ কার্যক্রমে খরচের পর তহবিলের বাকি অর্থের বেশিরভাগই জমা রাখা হয়েছে জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায়। চাইলেও সেগুলো কেউ আত্মসাৎ করতে পারবে না। কারণ সেগুলো বিশেষভাবে খোলা হয়েছে, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকও যুক্ত রয়েছেন। তিনিসহ আরও দুইজনের সম্মিলিত সিগনেচার ছাড়া কেউ টাকা তুলতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ত্রাণ কার্যক্রমের আয় ও ব্যয়ের ওপর একটি অডিট করছি এবং আগামী কয়েকদিনের মধ্যে অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। সিএ ফার্মের প্রফেশনাল ব্যক্তিদের দিয়েই নিজ দায়িত্বে এটা আমরা করছি, যাতে পরবর্তীতে কেউ কোনো অভিযোগ বা অপবাদ দিতে না পারে।’

হাসনাত বলেন, ‘প্লাটফর্মের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় যত সভা-সমাবেশ হচ্ছে, সেগুলোতেও ত্রাণের কোনো অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে না। কেউ যদি দেখাতে পারে যে, আমরা ত্রাণ তহবিলের কোনো টাকা অন্যকাজে ব্যবহার করছি, তাহলে যা শাস্তি দেওয়া হবে, বিনাবাক্যে সেটা মাথা পেতে নেবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু করার পর থেকেই সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছায় আমাদের সহযোগিতা করে আসছেন, এখনও করছেন।’

তিনি বলেন, ‘অন্যদের থেকে আমরা শুধু সেবাটা নিচ্ছি। এক্ষেত্রে কেউ কেউ তাদের গাড়ি দিয়ে আমাদের পৌঁছে দিচ্ছেন, অনেকে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন, এভাবেই চলছে। তবে এখন যেহেতু এটা নিয়েও কথা উঠছে, সেজন্য আগামীতে কারা কী ধরনের সেবা দিয়ে আমাদের সহায়তা করছেন, সেটার তালিকাও আমরা প্রকাশের কথা ভাবছি।’

সব শেষ তিনি বলেন, ‘কেউ যদি এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবো।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877